আমরা আজকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো ৩০০০০ হাজার টাকার মোবাইল ফোন
সম্পর্কে। আমরা যে ৬টি ফোন সম্পর্কে আলোচনা করবো আমরা আশা করছি এই ফোনগুলো
সম্পর্কে জেনে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন এবং এখান থেকে যেকোনো একটি ফোন
কেনার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমরা আজকে Samsung Galaxy A35 5G, Honor X8c,
Redmi Note 13 Pro 5G, Redmi Note 14 Pro, Samsung Galaxy A16 5G, Motorola
Moto G85 5G এই ৬টি ফোন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো। তাই চলুন আর কথা
না বাড়িয়ে বিস্তারিতভাবে ফোনগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক এবং জেনে নেওয়া
যাক ৩০ হাজারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৬টি ফোন সম্পর্কে।
Samsung Galaxy A35 5G
৩০০০০ হাজার টাকার মোবাইলগুলোর মধ্যে আজকে আমাদের প্রথম মোবাইলটি হচ্ছে
Samsung Galaxy A35 5G। চলুন এই ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে আসি।
Samsung Galaxy A35 5G ফোনটির অফিসিয়ালটির দাম ৩০ হাজার টাকার ডাবল দাম।
তবে এর আন অফিসিয়াল ভার্সনটির দাম কম রয়েছে। তো যাদের আন অফিসিয়াল ফোনের
প্রতি টান বেশি তাদের জন্য এই ফোনটি সেরা হতে পারে। ফোনটির স্টোরেজ হিসেবে
থাকছে ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি রম, যার আন অফিসিয়াল দাম ৩০,০০০ টাকা এবং
অপরদিকে আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬জিবি রম যার দাম রাখা হয়েছে
৩৩,৫০০ টাকা।
চলুন এবার এই ফোনের স্পেসিফিকেশ ও ফিচারসমূহ জেনে নেওয়া যাক। ফোনটিতে
প্রসেসর বা চিপসেট হিসেবে রয়েছে Samsung Exynos 1380,
সিপিইউ Octa core (2.4 GHz, Quad core, Cortex A78 + 2 GHz, Quad
core, Cortex A55) ও জিপিইউ Mali-G68 MP5। ফোনটির ইউজার ইন্টারফেস
হিসেবে রয়েছে One UI এবং ফোনটিতে অপারেটিং ভার্সন হিসেবে রান করবে
v14। এছাড়া স্যামসাং তাদের A35 5G মডেলে ৪ বছরের সফটওয়্যার আপডেট ও ৫ বছরের
সিকিউরিটি আপডেট দিবে বলে জানিয়েছে। এই ফোনে যে প্রসেসরটি ব্যবহার করা
হয়েছে এটি মূলত স্যামসাংয়ের নিজস্ব। আপনি এই ফোনটি দিয়ে গেমিং করে মজা বা
আনন্দ পাবেন না। ফোনটি মোটেও গেমিংয়ের জন্য নয়। আপনি এটি দিয়ে সাধারণ
কাজগুলো করতে পারেন এবং হালকা পাতলা গেমিং করতে পারেন এতে কোনো সমস্যা
হবেনা।
প্রাইমারি ক্যামেরায় থাকছে তিনটি শুটার যার কোয়ালিটি 50 MP f/1.8, Wide
Angle, Primary Camera, 8 MP f/2.2, Ultra-Wide Angle Camera, 5 MP f/2.4,
Macro Camera। আর সেলফি ক্যামেরায় থাকছে 13 MP f/2.2, Wide Angle,
Primary Camera। আমরা বরাবরই জেনে এসেছি স্যামসাংয়ের ক্যামেরা বেশ ভালোই
এবং তারা Sony সেন্সর এই ক্যামেরায় ব্যবহার করেছে। ক্যামেরা দিয়ে ছবি বেশ
ভালো রকম উঠে। দিনের আলোতে ভালো আসে এবং আপনি যদি রাতের আলোতে তুলতে চান
তবে নাইট মুড অন করে তুললে বেশ ভালো উঠবে।
Galaxy A35 5G ফোনের ডিসপ্লে Super AMOLED, যার সাইজ ৬.৬ ইঞ্চি,
ডিসপ্লে প্রোটেকশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Corning Gorilla Glass,
Glass Victus Plus, ব্রাইটন্সে পাওয়া যাবে ১০০০ নিট ও রিফ্রেশিং রেট ১২০
হার্জ। ফোনটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট অন ডিসপ্লেতে রয়েছে। ফোনটির ওজন মাত্র ২০৯
গ্রাম। এটি বিল্ড করা হয়েছে ব্যাকসাইড গ্লাস ও চারদিকে প্লাস্টিক। ফোনটির
কালার হিসেবে পাওয়া যাবে Iceblue, Lilac, Navy, Lemon।
ফোনটির ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ৫০০০mAh। ফোনকে চার্জ করার জন্য পাওয়া যাবে ২৫
ওয়াটের একটি সুপার ফাস্ট টাইপি সি ২.০ চার্জার। ব্যাকআপ হিসেবে আপনি পেয়ে
যাবেন এক দিনের মতো। আর যদি আপনি হেভি ইউজার হন তবে ১১-১২ ঘন্টার মতো
ব্যাকআপ পেতে পারেন। ফোনটি যেহেতু 5G সেহেতু এতে নেটওয়ার্ক সাপোর্টেট
হিসেবে পাওয়া যাবে 2G, 3G, 4G, 5G। এছাড়া আরো রয়েছে, Wi-Fi 6E
(802.11 a/b/g/n/ac/ax) 5GHz 6GHz, MIMO, Bluetooth v5.3, Wi-fi
Hotspot, VoLTE ইত্যাদি।
৩০ হাজারের মধ্যে ভালো ফোন এটি হতে পারে। আপনার বাজেট যদি ৩০ হাজার হয়ে
থাকে তবে স্যামসাং গ্যালাক্সি M35 5G ফোনটি আপনার চয়েজ লিস্টে রাখতে পারেন।
Honor X8c
৩০ হাজার টাকার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৬টি ফোনগুলোর মধ্যে আমাদের
লিস্টের দ্বিতীয় ফোনটি হচ্ছে Honor X8c। চলুন তবে এই ফোনটি সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেই।
Honor X8c ফোনটি অফিসিয়াল একটি ফোন যার দাম ২৯,৯৯৯ টাকা। এর আন অফিসিয়াল
ভ্যারিয়েন্টও রয়েছে যেটির দাম রাখা হয়েছে ২৪,০০০ টাকার মতো। ফোনটির স্টোরেজ
হিসেবে পাওয়া যাবে ৮ জিবি র্যাম ও ৫১২ জিবি রম এবং আন অফিসিয়ালের ক্ষেত্রেও
একই এতে কোনো ভিন্নতা নেই।
Honor X8c ফোনটির প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Qualcomm SM6225
Snapdragon 685। এটি মূলত একটি মিড রেঞ্জের প্রসেসর। গেমিংয়ের জন্য এই
প্রসেসরটি একদম ভালো হবেনা। তবে আপনি সাধারণ কাজগুলো এটি দিয়ে খুবই সহজে করতে
পারবেন। ফোনটি সিপিইউ হিসেবে রয়েছে Octa-core (4x2.8 GHz Cortex-A73
& 4x1.9 GHz Cortex-A53)।
ডিসপ্লে হিসেবে রয়েছে AMOLED যার সাইজ ৬.৭ ইঞ্চি, ডিসপ্লেতে প্রতিটি ছবি বা
দৃশ্য দেখা জন্য এতে রেজোলিউশন হিসেবে রয়েছে 1080x2412 px (FHD+) যা
আপনার ডিসপ্লেতে দেখে প্রতিটি জিনিস খুবই স্পষ্ট করবে। ফোনটির ডিসপ্লে
সুরক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে Gorilla Glass যা ফোনের স্ক্রিনটিকে স্ক্রাচ
থেকে সুরক্ষা করবে। ডিসপ্লের একদম টপ পজিশনে রয়েছে পাঞ্চ হোল সেলফি ক্যামেরা
যা ফোনটিকে একটি প্রিমিয়াম লুক দেয় কিছুটা iPhone এর মতো। রিফ্রেশিং রেট
হিসেবে রয়েছে ১২০ হার্জ যা স্ক্রলিং, গেমিং ও সাধারণ কাজগুলো করতে খুবই
সাহায্য করে এবং প্রতিটি কাজ খুবই দ্রুত হয়। আর আন ডিসপ্লেতে কিন্তু
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর রয়েছে যা দিয়ে আপনি ফোনটিকে আনলক করতে পারবেন।
Honor X8c ফোনের মেইন বা প্রাইমারি ক্যামেরা হিসেবে রয়েছে ১০৮ মেগাপিক্সেলের
একটি Wide Angle ক্যামেরা এবং আরেকটি 5 MP, f/2.2, Ultra-Wide
Angle ক্যামেরা। ক্যামেরায় বেশ ভালো রকমে ছবি তুলো যায় এবং প্রতিটি সাবজেক্ট
খুবই সুন্দরভাবে ক্যাপচার করতে পারে। যারা সেলফি তুলতে পছন্দ করেন তাদের জন্য
রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের একটি Wide Angle ক্যামেরা। সেলফি ক্যামেরা
দিয়ে ছবি বেশ ভালোই আসে।
ফোনটির ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি বেশ ভালো ও উন্নত বলা চলে। ফোনটির ওজন মাত্র
১৭৪ গ্রাম। ফোনটি বিল্ড করা হয়েছে কাচের সামনের অংশ, প্লাস্টিকের ফ্রেম,
প্লাস্টিকের পিছনের অংশ অথবা সিলিকন পলিমার পিছনের অংশ (ইকো লেদার)। কালার
হিসেবে পাওয়া যাবে Marrs Green, Midnight Black, Moonlight White এবং
ফোনটিতে রয়েছে IP64 রেটিং ও ডাস্ট প্রুভ যা হালকা পানি ও ধুলোবালি থেকে
সুরক্ষা করবে।
ব্যাটারিতে রয়েছে ৫০০০mAh এর লি-পলিমার ব্যাটারি। যাকে চার্জ করার জন্য পাওয়া
যাবে ৩৫ ওয়াটের একটি টাইপ-সি ২.০ চার্জার। এই চার্জার দিয়ে ফোনটিকে চার্জ
করতে সময় লাগবে আনুমানিক ১ ঘন্টা ২০-৩০ মিনিটের মতো। আর ব্যাকআপ হিসেবে পাওয়া
যেতে পারে এক থেকে দেড় দিনের মতো যদি হালকা পাতলা ইউজ করেন।
Redmi Note 13 Pro 5G
চলুন এবার ৩০ হাজারের মধ্যে আরেকটি স্মার্টফোন Redmi Note 13 Pro
5G সম্পর্কে জেনে নেই। Redmi Note 13 Pro 5G ফোনের বেশ কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট
রয়েছে এবং প্রতিটি ভ্যারিয়েন্টের দাম আলাদা ও এগুলোর অফিসিয়াল+আন অফিসিয়াল
দুটি রয়েছে। আমরা আজকে জানবো আন অফিসিয়াল ফোনগুলো সম্পর্কে।
-
৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি রম ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ২৮,০০০ টাকা।
- ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ৩০,৫০০ টাকা।
- ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ৩২,০০০ টাকা।
- ১২ জিবি র্যাম ও ৫১২ জিবি রম ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ৩৬,০০০ টাকা।
এই ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Qualcomm Snapdragon 7S
Gen 2। এই প্রসেসরে আপনি গেমিং থেকে শুরু করে মাল্টি টাস্কিং স্মুথলি করতে
পারবেন। এর UI HyperOS থাকায় প্রতিটি কাজ খুবই নিখুঁতভাবে করতে পারবেন।
ফোনে সিপিইউ হিসেবে রয়েছে Octa core (2.4 GHz, Quad core, Cortex A78 +
1.95 GHz, Quad core, Cortex A55)। এই ফোনে যে চিপসেটটি দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে
আপনি খুবই ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন এবং প্রতিটি কাজ খুবই নিখুঁত ও করে মজা
পাবেন।
Redmi Note 13 Pro 5G ফোনের ডিসপ্লে সাইজ ৬.৬৭ ইঞ্চি। ডিসপ্লে
রেজোলিউশন 1220x2712 px (FHD+)। ডিসপ্লে ফুল HD+ হওয়ায় এখানে দেখা
প্রতিটি দৃশ্য খুবই স্বচ্ছ ও ভিজ্যুয়াল। আপনি এই ডিসপ্লেতে গেমিং সহ অন্যান্য
কাজ করে বেশ মজা পাবেন এবং প্রতিটি জিনিস খুবই সুন্দরভাবে দেখতে পাবেন।
ডিসপ্লে প্রোটেকশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস যা
ডিসপ্লেকে স্ক্র্যাচ থেকে রক্ষা করবে। এতে রয়েছে ১২০ হার্জ রিফ্রেশিং রেট যা
প্রতিটি কাজ দ্রুত করতে সাহায্য করবে। আর এই ফোনের ডিসপ্লের টপ পজিশনে রয়েছে
পাঞ্চ হোল ক্যামেরা যা ফোনটিকে প্রিমিয়াল লুক দেয়।
ফোনটির প্রাইমারি ক্যামেরায় রয়েছে ২০০ মেগাপিক্সেল এফ/১.৭, ওয়াইড
অ্যাঙ্গেল, প্রাইমারি ক্যামেরা, ৮ মেগাপিক্সেল এফ/২.২, আল্ট্রা-ওয়াইড
অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, ২ মেগাপিক্সেল এফ/২.৪, ম্যাক্রো ক্যামেরা।
প্রাইমারি ক্যামেরায় সেন্সর হিসেবে রয়েছে S5KHP3, ISO-CELL। প্রাইমারি
ক্যামেরা ২০০ মেগাপিক্সেল হওয়ায় ক্যামেরায় তোলা প্রতিটি ছবি দেখতে খুবই
সুন্দর লাগে এবং প্রতিটি সাবজেক্টকে নিখুঁতভাবে ক্যাপচার করে। ক্যামেরায় তোলা
প্রতিটি ইমেজের রেজোলিউশন পাওয়া যাবে 16300 x 12300 Pixels। আর সেলফি
ক্যামেরা হিসেবে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেল এফ/২.৫, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল
ক্যামেরা যেটি দিয়েও ছবি বেশ ভালো আসে। যারা ক্যামেরা ভালো মানের চান
তাদের জন্য এই ফোনটি সেরা চয়েজ হতে পারে। আপনি যদি ৩০ হাজার টাকায় ভালো ক্যামেরা ফোন খুঁজেন তবে এটি আপনার
জন্য একটি সেরা চয়েজ হতে পারে।
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটির দিক থেকে এই ফোনটি অত্যান্ত চমৎকার ও কোয়ালিটি
সম্পন্ন। এর ক্যামেরা সেটআপ থেকে শুরু করে এর ওজন ও কালার বেশ চমৎকার। আর
ব্যাটারি হিসেবে রয়েছে ৫১০০mAh এর লি-পলিমার ব্যাটারি। আর এই ব্যাটারিকে
চার্জ করার জন্য চার্জার হিসেবে রয়েছে ৬৭ ওয়াটের চার্জার।
আপনার বাজেট যদি থাকে ৩০ হাজার তবে ৩০ হাজারের মধ্যে ভালো ফোনগুলোর
তালিকায় এটিকে রাখতে পারেন।
Redmi Note 14 Pro
আমাদের ৩০ হাজারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৬টি ফোনের মধ্যে চর্তুথ
ফোনটি হচ্ছে Redmi Note 14 Pro। চলুন এই ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে
আসি।
Redmi Note 14 Pro ফোনটির দুটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে এবং এই দুটি ভ্যারিয়েন্ট
অফিসিয়াল। প্রথম ভ্যারিয়েন্টটি ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম যার প্রাইজ
২৯,৯৯৯ টাকা এবং দ্বিতীয় ভ্যারিয়েন্টটি ১২ জিবি র্যাম ও ৫১২ জিবি রম যার দাম
৩৩,৯৯৯ টাকা।
Redmi Note 14 Pro ফোনের প্রসেসর হিসেবে রয়েছে Mediatek Helio G100
Ultra। এই প্রসেসর একটি উন্নতমানে। আপনি এই প্রসেসর বা চিপসেটে কাজ করে বেশ
মজা পাবেন। গেমিং থেকে শুরু করে মাল্টি টাস্কিং প্রতিটি কাজ করে আপনি বেশ
উপভোগ করতে পারবেন এবং প্রতিটি কাজ হবে খুবই নিখুঁত। এই ফোনে সিপিইউ হিসেবে
রয়েছে Octa-core (2x2.2 GHz Cortex-A76 & 6x2.0 GHz Cortex-A55) এবং
জিপিইউ Mali-G57 MC2। এই ফোনে UI HyperOS থাকা কাজ করে বেশ মজা
পাওয়া যায় এবং স্মুথলি কাজ করা যায়। এই ফোনে OS ভার্সন রান করবে v14।
Redmi Note 14 Pro ফোনের টপ পজিশনে রয়েছে পাঞ্চ হোল ক্যামেরা যা ফোনটিকে
প্রিমিয়াল লুক দেয়। এই ফোনের ডিসপ্লে সাইজ ৬.৬৭ ইঞ্চি, যার
রেজোলেউশন 1080x2400 px (FHD+)। এর ডিসপ্লে ফুল HD+ হওয়ায় প্রতিটি দৃশ্য
বা ছবি বেশ পরিষ্কার দেখায় এবং এতে রিফ্রেশিং রেট ১২০ হার্জ থাকায় প্লাস
পয়েন্ট হিসেব গেমিং ও অন্যান্য কাজ করে বেশ মজা পাওয়া যায়। বিশেষ করে ফোনটিকে
আনলক করার জন্য পেয়ে যাবেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট আন ডিসপ্লে অপশন।
প্রাইমারি বা মেইন ক্যামেরায় থাকছে ২০০ এমপি, f/১.৭, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল,
প্রাইমারি ক্যামেরা, ৮ এমপি, f/২.২, আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, ২
এমপি, f/২.৪, ম্যাক্রো ক্যামেরা, যার ইমেজ রেজোলেউশন হিসেবে পাওয়া
যাবে 16000 x 12500 Pixels, ফটো শুটিং মোড হিসেবে থাকছে ক্রমাগত শুটিং, উচ্চ গতিশীল রেঞ্জ মোড (HDR)। মেইন
ক্যামেরা বেশ ভালো হওয়ায় প্রতিটি ছবি বেশ দারুন উঠে এবং সাবজেক্টকে বেশ
ভালোভাবে ক্যাপচার করতে পারে। আর সেলফি ক্যামেরায় থাকছে ৩২ এমপি, f/২.২, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, প্রাইমারি ক্যামেরা যার মানও বেশ উন্নত
ও কোয়ালিটি সম্পন্ন। আপনি যদি ৩০ হাজার টাকায় ভালো ক্যামেরা ফোন
খুঁজেন তবে এটি আপনার জন্য একটি সেরা চয়েজ হতে পারে।
ব্যাটারি হিসেবে Redmi Note 14
Pro ফোনে রয়েছে ৫৫০০mAh ক্যাপাসিটি ব্যাটারি। ব্যাকআপ হিসেবে পাওয়া যাবে এক
থেকে দেড় দিনের মতো। আর যদি আপনি ভারী ইউজার হন তবে ১৩-১৪ ঘন্টার মতো ব্যাকআপ
পেতে পারেন। আর ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেলে চার্জ করার জন্য পেয়ে যাবেন ৪৫
ওয়াটের টাইপ-সি ২.০ এর একটি চার্জার।
৩০ হাজার টাকার মধ্যে এই ফোন একটি সেরা চয়েজ হতে পারে এবং ৩০ হাজারের
মধ্যে ভালো ফোনগুলোর মধ্যে এটিকে আপনার চয়েজ লিস্টে রাখতে পারেন।
Samsung Galaxy A16 5G
আমাদের আজকের লিস্টের পঞ্চম ফোনটি হচ্ছে একটি 5G ফোন যার ব্র্যান্ড স্যামসাং
ও মডেল Galaxy A16। চলুন এই ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া
যাক।
Samsung Galaxy A16 5G ফোনের তিনটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে এবং প্রতিটি
ভ্যারিয়েন্ট অফিসিয়াল। চলুন এগুলো স্টোরেজ ও দাম ধারাবাহিকভাবে জেনে নেই:
- ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবির রম ভ্যারিয়েন্টের দাম ২৩,৯৯৯ টাকা।
- ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবির রম ভ্যারিয়েন্টের দাম ২৬,৪৯৯ টাকা।
- ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবির রম ভ্যারিয়েন্টের দাম ৩০,৯৯৯ টাকা।
এই ফোনে প্রসেসর বা চিপসেট হিসেবে রয়েছে Exynos 1330 যা স্যামসাংয়ের
নিজস্ব তৈরি একটি প্রসেসর। সিপিইউ হিসেবে রয়েছে Octa-core (2x2.4 GHz
Cortex-A78 & 6x2.0 GHz Cortex-A55) ও জিপিইউ Mali-G68 MP2। এই
ফোনের প্রসেসর মিড রেঞ্জের ধরা যায়। আপনি এই প্রসেসর গেমিং থেকে শুরু করে
মাল্টি-টাস্কিং মোটামুটিভাবে করতে পারবেন। তবে আপনি যদি ভারী গেমিং করে বেশি
সময় ধরে তবে ফোন কিছুটা গরম হয়ে যেতে পারে। ফোনটি UI হিসেবে রয়েছে One
UI 6.1 যা ফোনটিকে দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করে এবং আপনি ব্যবহার করেও বেশ মজা
পাবেন। ফোনটিতে OS হিসেবে রান করবে v14।
Samsung Galaxy A16 5G ফোনটির ফন্ট অর্থাৎ ডিসপ্লের টপ পজিশনে রয়েছে পাঞ্চ
হোল ক্যামেরা সিস্টেম যা ফোনটিকে প্রিমিয়াম লুক দেয়। ডিসপ্লে সাইজ ৬.৭ ইঞ্চি,
ডিসপ্লে রেজোলেউশন 1080x2340 px (FHD+)। ডিসপ্লে রেজোলেউশন Full HD+
হওয়ায় ভিজ্যুয়াল কনটেন্টকে প্রাণবন্ত করে তোলে। ফোনটির স্ক্রিন সুরক্ষায়
ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস, যা ডিসপ্লেকে স্ক্র্যাচ থেকে রক্ষা
করতে সাহায্য করে। এই ফোনের রয়েছে ৯০ হার্জ রিফ্রেশিং রেট যা গেমিং ও
মাল্টি-টাস্কিং প্রতিটি কাজ করতে দ্রুত সাহায্য করে।
Samsung Galaxy A16 ফোনের মেইন বা প্রাইমারি ক্যামেরা হিসেবে থাকছে ৫০ এমপি,
f/১.৮, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, প্রাইমারি ক্যামেরা, ৫ এমপি, f/২.২, আল্ট্রা-ওয়াইড
অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, ২ এমপি, f/২.৪, ম্যাক্রো ক্যামেরা। অপরদিকে সেলফি
ক্যামেরায় থাকছে ১৩ এমপি, f/২.০, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, প্রাইমারি ক্যামেরা।
এই ফোনের ক্যামেরা কোয়ালিটি বেশ ভালো ও ছবি খুবই ভালো আসে। আপনি যদি দিনে
আলোতে ছবি তুলেন তবে কোয়ালিটি বেশ ভালো পাবেন আর রাতে ছবি তোলার সময় নাইট
মুড অন করে যদি ছবি তুলেন তবে এর কোয়ালিটিও বেশ ভালো আসবে।
এই ফোনের ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি বেশ ভালো ও প্রিমিয়াম। ফোনটি বিল্ড করা
হয়েছে কাচের সামনের অংশ, প্লাস্টিকের পিছনের অংশ, প্লাস্টিকের ফ্রেম এবং
ফোনের কালার হিসেবে পাওয়া যাবে Blue Black, Light Gray, Gold, Light
Green। ফোনটি হালকা পাতলা পানি ও ধুলোবালি প্রতিরোধী তাই এতে রয়েছে IP54
রেটিং। এছাড়া, ব্যাটারিতে রয়েছে ৫০০০mAh এর ক্যাপাসিটি ও ২৫ ওয়াটের একটি
চার্জার।
ফোনতে নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে 2G, 3G, 4G, 5G এবং খুবই দ্রুত গতিতে যদি
ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তবে এই ফোনটি আপনার জন্য সেরা চয়েজ হতে পারে।
Motorola Moto G85 5G
আজকে আমাদের আর্টিকেলে ৩০ হাজারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৬টি ফোন এর মধ্যে
ষষ্ঠতম ফোনটি হচ্ছে Motorola Moto G85 5G। চলুন তবে Motorola Moto G85
5G ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে আসি।
Motorola Moto G85 ফোনটি বর্তমান বাংলাদেশ বাজারে দুটি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া
যাচ্ছে এবং এটি আন অফিসিয়াল ফোন। এর প্রথম ভ্যারিয়েন্টটি ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮
জিবি রম স্টোরেজের ফোনটির দাম ২৪,৫০০ টাকা এবং আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট ৮ জিবি
র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম স্টোরেজের দাম ২৭,৮০০ টাকার মতো রাখা হয়েছে।
এই ফোনে প্রসেসর বা চিপসেট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Qualcomm SM6375
Snapdragon 6s Gen 3, সিপিইউ হিসেবে রয়েছে Octa-core (2x2.2 GHz Kryo
660 Gold & 6x1.7 GHz Kryo 660 Silver) এবং জিপিইউ Adreno 619। এই
ফোনে যে প্রসেসরটি দেওয়া হয়েছে এটি একটি মিড রেঞ্জের প্রসেসর। আপনি এই
প্রসেসর হালকা থেকে হালকা-ভারী কাজগুলো খুব সহজে করতে পারবেন এবং প্রতিটি কাজ
হবে স্মুথলি ও দ্রুত। এছাড়া আপনি হালকা থেকে ভারী গেমগুলো খেলতে পারবেন।
Motorola Moto G85 ফোনে ডিসপ্লের টপ পজিশনের রয়েছে পাঞ্চ হোল সেলফি ক্যামেরা
যা ফোনের গেটআপকে চেঞ্জ করে দেয় এবং প্রিমিয়াম লুক দেয়। এই ফোনটিকে আরো
প্রিমিয়াম দেখা কারণ এর চারদিকে গ্লাসগুলো কিছুটা রাউন্ড সেপের। ফোনটির
ডিসপ্লে হিসেবে দেওয়া হয়েছে P-OLED যার সাইজ ৬.৬৭ ইঞ্চি, ইমেজ
রেজোলিউশন 1080x2400 px (FHD+), আর ডিসপ্লে ফুল HD+ হওয়ায় এখানে আপনি
গেমিং, ভিডিও স্ট্রিমিং ও অন্যান্য কাজ করে বেশ মজা ও আনন্দ পাবেন। এই ফোনের
স্ক্রিন প্রোটেক্টর হিসেবে দেওয়া হয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৫, ডিসপ্লেতে
ব্রাইটন্সে হিসেবে পাওয়া যাবে ১৬০০ নিট ও রিফ্রেশিং রেট ১২০ হার্জ থাকায়
প্রতিটি কাজ হবে দ্রুত ও স্মুথলি।
এই ফোনের মেইন বা প্রাইমারি ক্যামেরা সেটআপ ডুয়েল। যার কোয়ালিটি ৫০
মেগাপিক্সেল, f/১.৯ ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, প্রাইমারি ক্যামেরা, ৮ মেগাপিক্সেল,
f/২.২, আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, ইমেজ রেজোলিউশন পাওয়া যাবে ৮১৫০ x
৬১৫০ পিক্সেল। ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করা যাবে ১৯২০x১০৮০ এবং ভিডিও FPS
পাওয়া যাবে 30fps। এর মেইন ক্যামেরা দিয়ে আপনি বেশ ভালো রকমের ছবি তুলতে
পারবেন। সেলফি ক্যামেরায় থাকছে ৩২ মেগাপিক্সেল, এফ/২.৫, ওয়াইড
অ্যাঙ্গেল। আর ভিডিও করতে পারবেন সাথে ভিডিও FPS পাওয়া যাবে মেইন ক্যামেরার
মতো।
Motorola Moto G85 ফোনের ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে যদি বলি তবে এই ফোনটি
বিল্ড করা হয়েছে কাচের সামনের অংশ, প্লাস্টিকের ফ্রেম, প্লাস্টিকের
পিছনের অংশ অথবা ইকো লেদারের পিছনের অংশ। ফোনের ওজন মাত্র ১৭১ গ্রাম। এছাড়া
ফোনটিতে রয়েছে IP52 রেটিং যা আপনার ফোনকে হালকা পানির ছিটেফোটা ও
ধুলোবালি থেকে সুরক্ষা করবে। এই ফোনের কালার হিসেবে পাওয়া যাবে Olive
Green, Cobalt Blue, Urban Grey, Magenta। এর ডিজাইন কোয়ালিটি বেশ চমৎকার ও
প্রিমিয়াম লুক দেয়।
এই ফোনের ব্যাটারি হিসেবে পাওয়া যাবে ৫০০০mAh ক্যাপাসিটি লি-পলিমার ব্যাটারি।
আপনি যদি সাধারণ কাজগুলোর জন্য এই ফোনটিকে ব্যবহার করেন তবে ব্যাকআপ হিসেবে
পাওয়া যাবে এক থেকে দেড় দিনের মতো। আর আপনি যদি ভারী কাজের জন্য ব্যবহার করেন
এবং দীর্ঘসময় ধরে গেমিং করেন তবে ব্যাকআপ হিসেবে ১২-১৩ ঘন্টার মতো ব্যাকআপ
পেতে পারেন। ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলে এটিকে চার্জ করার জন্য পেয়ে যাবেন ৩৫
ওয়াটের একটি ফাস্ট চার্জার যা দিয়ে ফোনটিকে চার্জ করতে সময় লাগতে পারে ১
ঘন্টা ২০-৩০ মিনিটের মতো।
এই ফোনে নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে 2G, 3G, 4G, 5G বিধায় এই ফোনের নাম
Motorola Moto G85 5G। আপনি দ্রুতগতিতে যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তবে
এই ফোনটি আপনার জন্য সেরা একটি চয়েজ হতে পারে। এতে 5G নেটওয়ার্ক সাপোর্ট
থাকায় দ্রুতগতিতে নেট চলবে।
৩০ হাজারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৬টি ফোন সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে
নিলাম। আপনার বাজেট যদি ৩০ হাজার টাকা হয়ে থাকে তবে আপনি এই ৬টি ফোনের ভেতরে
যেকোনো একটি চয়েজ করে নিতে পারেন। ৩০ হাজারের মধ্যে ভালো ফোন সম্পর্কে
আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদের বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি। আপনার
পরিচিত কেউ যদি ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ফোন ক্রয় করতে চায় তবে তাকে আমাদের এই
আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন এবং ফোনগুলো সম্পর্কে জেনে যেকোনো একটি ফোন কেনার
জন্য আপনি সাজেস্ট করতে পারেন।